
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামে নিহত ওয়াসিম হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ কয়েকডজন মামলার আসামী কক্সবাজার-১ আসনের আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের ‘ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত’ চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নবী হোছাইন চৌধুরীকে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনুজর কাদের ভূইয়া হাজতখানায় না রেখে অফিসে কক্ষে পাশে বসিয়ে নৈশভোজ করেন। এছাড়াও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে এমন চতুর্মুখী সখ্যতা রয়েছেন ওসির বিরুদ্ধে।
নৈশভোজের একটি ছবি মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে, নৈশভোজের সময় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোছাইনকে উদ্দেশ্য করে ওসি মো. মনজুর কাদের বলেন, আগস্টের হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগ তুলে হেয় করতে শুরু করেন। পরে চট্টগ্রাম এলাকায় যত গরু, মহিষ চুরি হয় সবই নবী তোমার নেতৃত্বে। ওসির এমন মন্তব্য নবী হোছাইন বলেন- আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য। ওসি নানা প্রশ্ন করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। নবী জানান- আমি (৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জেলা কারাগারে ছিলাম। পরে ওসি বলেন- সাংবাদিক মুন্নাকে নিয়ে কী করা যায়,তাকে মামলা তুলে নিতে বলেন। নবী জানান- মুন্নার সাথে আমার যোগাযোগ ছিল না মামলার পর তার সাথে যোগাযোগ হয়েছে। কথোপকথনে সময় নবী হোছাইনের জন্য গরুর মাংস রান্না করে নিয়ে আসা নবী হোছাইনের মুখে নান রুটি গরু মাংস খাওয়ে দেন এবং ওসি মনজুর কাদের হাসি খুশিতে ভরপুর কথোপকথন চালিয়ে যান।
সম্প্রতি একাধিক মামলার আসামীর সাথে ওসির সাথে নৈশভোজের কথোপকথোনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর তা নিয়ে ট্রল এবং সমালোচনার ঝড় উঠেছে৷
এই অবস্থায় ওসির বহাল তবিয়তে থাকা নিয়েও ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে, বার বার বিতর্কের জন্ম দেওয়া এই ওসি কী এবারও বহাল তবিয়তে থাকবেন! না-কি বিশেষ আর্শীবাদে বার বার পার পেয়ে যাবেন ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া ?
সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নবী হোছাইন বলেন, শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) বিকাল সাড়ে ৫টায় চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার সবুজ হোটেলের সামনে চকবাজার থানা পুলিশ আটক করেন। পরে রাতে চকবাজার পুলিশের হেফাজত থেকে চকরিয়া থানার পুলিশ সংশ্লিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণের আশ্বাস দিয়ে থানায় নিয়ে আসেন। এর পর থেকে বিভিন্ন ভাবে টাকা চাইতে থাকেন ওসি। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে চলে অমানুষিক নির্যাতন।
শনিবার দুপুরের দিকে থানার দ্বিতীয় তলায় একটি টর্চার সেল ওসিসহ ৭-৮ জন পুলিশ আমার হাত এবং চোখ বেঁধে ফেলে। পরে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। ব্যথার প্রকোপে গুরুত্বর আহত হয়ে পরলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরে থানায় নিয়ে আসলে দ্বিতীয় তলায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কক্ষে বসিয়ে রাখিয়েন।
সন্ধ্যার দিকে ওসি নির্দেশ থানার বাবর্চি নেজাম উদ্দিন গরু মাংস এবং নান রুটি নিয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পর ওসি ওই কক্ষে এসে আমার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে কথোপকথন করেন। এক পর্যায়ে ওসি নানা ধরনের প্রশ্ন করে এবং ভয়-ভীতি দেখায়। হত্যা মামলায় দেবো, অস্ত্র মামলায় দেবো, আগামী কয়েক বছরেও জামিন হবে না। এমন নানা ধরনের কথা বলে ভয় ভীতি দেখাতে থাকেন। এইসব থেকে বাচতে হলে দশ লাখ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেন। টাকা না দিলে আবার মারধর ও অস্ত্র দিয়ে মামলার হুমকি দেন। পরে নিরুপায় হয়ে কিছুটা আশ্বাস দিলে ওসি খুশি হয়ে আমার মুখে গরু মাংস খাওয়ায়ে দেন এবং ওসি বলেন টাকা গুলো দেন পরবর্তীতে কোন ঝামেলা হলে আমি মিমাংসা করিয়ে দিবে বলে আশ্বাস দেন।
তিনি আরও জানান, গত ১৭ জানুয়ারি সাহারবিলে চিহ্নিত সন্ত্রাসী আমার বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা তান্ডবের শুরুতে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিই। এরইমধ্যে চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল আমার বাড়িতে পৌঁছে। ওইসময় ডাকাত সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িতে লুটতরাজ চালালেও পুলিশ ছিলেন নীরব। এসময় আমার ভাগিনা সোনা মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করেন। আবদুল গাফফার ও নাছির উদ্দিন গুরুত্বর আহত হয়। এ ঘটনার পর পুলিশ সন্ত্রাসীরা চলে যাবার পর আহত আবদুল গাফফার ও নাছির উদ্দিনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসা রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
অনুসন্ধান ও ব্যাপক খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওসি মনজুর কাদের ভূইয়ার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে হয়রানির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। চকরিয়ার মানুষই কৃষি নির্ভর। অনেকে দিন আনে দিন খায়। এসব সাধারণ মানুষকে সন্দেহজনক হিসেবে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এসব ঘটনা ফাঁস হয়ে গেলে যাতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বুঝানো যায় সেজন্য টাকা আদায় করার পরও অনেককে ৫৪ ধারায় সন্দেহজনক হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের পাঠানো হচ্ছে। থানার ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া থানায় যোগদানের পর থেকেই পুলিশের অনিয়ম দুর্নীতি বেড়েছে। যা পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙেছে। ওসি এলাকাবাসীর কাছে এখন এক মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। সাধারণ মানুষকে হয়রানি করায় ওসির প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের দানা বেঁধেছে।
ইতোমধ্যে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও স্বপদে বহাল আছেন ওসি। তার বিরুদ্ধে নেওয়া হয়নি কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
এদিকে, চকরিয়া থানার দ্বিতীয় তলায় সিঁড়ি পাশে থানা-মালখানায় জব্দকৃত আলামতের একটি কক্ষ। সেখানে থাকেন থানার এক উপপরিদর্শক। তাঁর কক্ষের পাশে আছে একটি টর্চাল সেল। অভিযোগ আছে, ওসির নির্দেশে সেখানে আটক ব্যক্তিদের নির্যাতন করেন থানার কয়েকজন উপ-পরিদর্শকসহ থানার পুলিশ। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে নিরপরাধ ব্যক্তি যেমন আছেন, তেমনি বিভিন্ন অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিও রয়েছেন। ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া এই থানায় যোগ দেওয়ার পর থেকে অর্ধশতাধিককে এই টর্চার সেলে নির্যাতনের তথ্য পাওয়া গেছে।
চকরিয়া থানার ওসি হিসাবে প্রায় পাঁচ মাস আগে যোগ দেন মো. মনুজর কাদের ভূইয়া। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে টর্চার সেল, রিমান্ড বাণিজ্য, ঘুষ বাণিজ্য, অপরাধীদের পক্ষ নিয়ে নিরীহ মানুষকে হয়রানি, নারী কেলেঙ্কারি, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ নানা অভিযোগের পাহাড় জমা হয়েছে।
জানা যায়,২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাঈদির মুক্তিকে কেন্দ্র করে ঈদগাঁওতে মিছিল বের করলে মিছিলে গুলিবর্ষণে আবদুর রশিদকে হত্যার ঘটনায় তৎকালীন সময়ে ঈদগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ- পরিদর্শক (এসআই) বর্তমান চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়াকে প্রধান আসামি করে ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের অলিয়াবাদ এলাকার মৃত মোহাম্মদ ইলিয়াসের ছেলে আকতার হোছাইন বাদী হয়ে আদালতে মামলার দায়ের করেন।
অপরদিকে, গত ২৫ জানুয়ারি জানুয়ারি গভীর রাতে ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার নির্দেশে চকরিয়া থেকে একদল পুলিশ কক্সবাজার শহর থেকে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের সাংবাদিক মনছুর আলম মুন্না আটক করে থানা নিয়ে গিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। একদিন আটক রাখার পর মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রায় ২১ দিন পর জামিনে মুক্তি পান মনছুর। জেল থেকে বাহির হয়ে চকরিয়া থানার ওসিসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা এবং চার কনস্টেবলের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে আদালতে মামলা দায়ের করেন মামলাটি সিআইডি পুলিশের নিকট তদন্তাধীন রয়েছে
এই ঘটনায় থানার ওসি মনজুর কাদের ভুইঁয়াকে প্রত্যাহার করার দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন কক্সাবাজারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার সচেতন সাংবাদিকরা।
অপরদিকে চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকায় যৌন নিপীড়ন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানার ওসি মনজুর কাদের ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী আবদুল গাফফারের স্ত্রী জাহেদা বেগম।
তিনি সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল নং ১ কক্সবাজারে থানার ওসিসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরো জানা যায়, সম্প্রতি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামক অভিযানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে একযোগে সারাদেশে পরিচালিত হচ্ছে এ অভিযান। পতিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন নষ্ট করতে না পারে সেই জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ অপারেশন পরিচালনা করছেন। কিন্তু চকরিয়া থানার ওসি মঞ্জুর কাদের ভুঁইয়া চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ধরে এনে কাউকে টাকার বিনিময়ে সন্দেহভাজন মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। কেউ টাকা দিতে অপারগতা দেখালে হাত-মুখ বেঁধে চালাচ্ছেন নির্মম নির্যাতনের পর কয়েকটি মামলার আসামী করেন।
অপরদিকে, গত (১৫ ফেব্রুয়ারী) অপারেশন ডেভিল হান্টের অংশ হিসেবে চাকরিয়া পৌরসভা কৃষকলীগের সভাপতি সুলাল কান্তি সুশীল কে আটক করে চকরিয়া থানা পুলিশ। পরে দুই লাখ টাকার রফাদফায় সন্দেহজনক ধারা (১৫৪) তে আটক দেখিয়ে পরদিন আদালতে প্রেরণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় চকরিয়া এডভোকেট এসোসিয়েশনের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ তঁর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে নিন্দা জানিয়ে লেখেন, নিরীহ মানুষকে যাদের কোনো আওয়ামীলীগের বা অঙ্গ সংগঠনের সুনির্দিষ্ট পদবি নেই তাদের হত্যা মামলা সহ তিনটা মামলায় চালান দিচ্ছেন, অথচ কৃষকলীগের চকরিয়া পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক কে সন্দেহজনক (১৫৪) ধারায় চালান দিচ্ছেন। কিসের বিনিময়ে এসব?
অপরদিকে, গত ২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মধ্যরাতে থানার কয়েক গজ অদূরে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাটাখালী এলাকায় প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির ঘটনায় ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া নির্দেশে তিনজনকে আটক করেন। এই ঘটনায় আটককৃত ভুক্তভোগী পরিবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আটককৃত মো. ইসমাইলের বড় ভাই জসিম উদ্দিন বলেন, আমার ভাই একজন রাজমেস্ত্রী। শনিবারও সারাদিন সে কর্মস্থলে ছিল। রাতে তাকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে
অপরদিকে আটককৃত নয়নের স্ত্রী বলেন, নয়ন একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। কোন রকম সে সংসার চালায়। আমার ঘরে উপযুক্ত তিন মেয়ে রয়েছে। তাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারিত) সকালে নয়ন চৌধুরীরসহ ৩ জনকে মিথ্যা মামলা, অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও তাদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারসহ চকরিয়ায় সর্বস্তরেরজনগণ।
এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা বলেন, প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কাহারিয়াঘোনাস্থ খোন্দকার পাড়ার নুরুল আমিনের ছেলে মো. নয়ন চৌধুরী (৪৫), একই ওয়ার্ডের ঘাট পাড়ার কবির আহমদের ছেলে মো. ইসমাইল (৩৫) ও পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বাটাখালী এলাকার মমতাজ উদ্দিন আহমদের ছেলে মো. হানিফ (৪৩) এর বিরুদ্ধে গত (২৩ ফেব্রুয়ারি) মামলা রুজু করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভুঁইয়া। যাদের বিরুদ্ধে যে মামলায় জড়ানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে এই মিথ্যা মামলা থেকে তাদেরকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়ার দাবি জানান বক্তারা। তা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দেন তারা।
এছাড়াও ওসি মনজুর কাদেরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগ পুলিশ হেড কোয়ার্টার, পুলিশ মহাপরিদর্শক নিকট তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
ওসি মনজুর কাদের ভূইয়া এ যেন শাঁখের করাত আসতেও কাটে যাইতেও কাটে। এই ওসির বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতি অনিয়মে শত শত অভিযোগ রয়েছে। ঘুষ বাণিজ্য অনিয়ম স্বেচ্ছারিতা ও অবৈধভাবে অর্জিত কালো টাকার গড়ে তুলেছে পাহাড়। যে কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে এত শত অভিযোগের পরে ও একজন ওসি কিভাবে এখনো বীরদর্পে বহাল তবিয়তে থাকতে পারে। এ যেন মগের মুল্লুক, দেখার কেউ নেই, সেই যেমন পেরেছে তেমন করে দুর্নীতির সাজে সেজেছে।
এদিকে শনিবার (১ মার্চ) কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ওসিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভুঁইয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, আসামীকে মারধর করছি না খাওয়াচ্ছি এটা তো কোন অপরাধ না।