দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন নিয়ে ‘গভীর’ ষড়যন্ত্র চলছে। পরিবেশের দোহাই দিয়ে দ্বীপ থেকে পর্যটকদের বিমুখ করতে এ ষড়যন্ত্র চলছে। এমন কি প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে আমেরিকাকে বিক্রির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন সেন্টমার্টিন বাসীরা।
শুক্রবার দুপুরে ‘পরিবেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে জোবাইর হোসেনের পরিচালনায় এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসী। সেখানে টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের সুগম পথ দেখিয়ে লক্ষ মানুষের জীবিকা বাঁচিয়ে রাখার দাবি তুলে পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে উদ্দেশ্যে করে স্থানীয় ইউপি সদস্য ছৈয়দ আলম বলেন, ‘এমন উদ্যোগ গ্রহণ করবেন না যা দিয়ে দ্বীপবাসীর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ দ্বীপ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। আমেরিকাকে এই দ্বীপ বিক্রি করতে দেওয়া হবেনা। এই দ্বীপ এখানকার বসবাসকারীদের। দ্বীপে আমরা আছি, আমরা থাকব।’
তিনি আরো বলেন, ‘সেন্টমার্টিন নিয়ে কিছু করার আগে, দ্বীপ ঘুরে যান। কোনো উদ্যোগ নেওয়ার আগে দ্বীপবাসীর সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। দ্বীপে পর্যটকরা যদি রাত্রী যাপন করতে না পারে, তাহলে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সেন্টমার্টিন বিমুখী হবে। বিশ্বের কাছে পরিচিত প্রবাল সেন্টমার্টিনের নাম মুচে যাবে। তাই সরকারে উচিত দ্বীপে ভ্রমণে রাত্রীযাপন নিষেধাজ্ঞা না দেওয়া।’
তাঁর মতে, এখানে দুই হাজার পরিবারের সাড়ে দশ হাজার লোক বসবাস করে, তাদের কথা ভাবা উচিত। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কোনো স্টেকহোল্ডারদের দ্বীপে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’
দ্বীপের বাসিন্দা নুর আলম বলেন, ‘দ্বীপে পর্যটক আসা যাবে কিন্তু রাত্রি যাপন করা যাবে না এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজকে আমাদের মানববন্ধন। ফ্যাসিবাদ সরকারের একজন উপদেষ্টা চেয়ারে বসে আছে দ্বীপবাসীদের বৈষম্য তৈরি করছে। আমরা এই উপদেষ্টার পদত্যাগ চাই। ঢাকার কোটিপতি ব্যবসায়ীদের সাথে এসি রুমে বসে দ্বীপবাসীর বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেটি আমরা বাস্তবায়ন করতে দেব না।’
তিনি বলেন,‘ গত সরকারের আমলে দ্বীপে পরিবেশের নাম দিয়ে দ্বীপে হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও সেন্টমার্টিন এর জন্য ২৫ টাকাও খরচ করা হয়নি। এই টাকার হিসাব না দেওয়া পর্যন্ত দ্বীপে এই উপদেষ্টাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, নুর আলম আরমান, ইসহাক মাহামুদ চৌধুরি, মৌলভি আবদুর রহমান, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ মৌলভী এমএ তাহের শাহীন, আলী হায়দার, জিয়াউল হক জিয়া, জাবেদ ইকবাল, মো. নাছির, আবছার প্রমুখ।
এদিকে দ্বীপের বাসিন্দা জানায়, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের ৮০ শতক মানুষ পর্যটক ব্যবসার উপর নির্ভরশীল। এদের বছরে আট মাস বেকার জীবন কাটাতে হয়। মূলত চার মাস পর্যটন খাতের আয়ের উপর জীবন যাত্রার চাকা ঘুরে। এই আয়ও যদি বন্ধ হয়ে পরে, আমাদের না খেয়ে থাকতে হবে। সরকারের উচিত আমাদের দ্বীপের সাড়ে দশ হাজার মানুষের কথা ভেবে দ্বীপে পর্যটক ব্যবসার চাকা খোলে দেওয়া হোক। পরিবেশ রক্ষা করে পর্যটক ব্যবসা ব্যবসা অব্যাহত রাখতে সরকারের কাছে দাবি আমাদের।