কক্সবাজার সদরের খুরুশকূলে ‘গাড়ী চুরির’ অভিযোগে ব্যাটারি চালিত এক ইজিবাইক চালককে পিটিয়ে হত্যার পর ফেলে রাখা মৃতদেহ উদ্ধার এবং জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার সকাল ১০ টার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের আল্লাঅলা হ্যাঁচারির পাশে একটি নালা থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান, কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াছ খান।
নিহত আবুল কালাম (৩৫) সদর উপজেলার খুরুশকূল ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফকির পাড়ার মৃত আমানুল হকের ছেলে।
ঘটনায় আটক জাফর উল্লাহ ( ৩৮) কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারি মোস্তাফিজুর রহমান।
তার আদি বাড়ী নোয়াখালী জেলার সূবর্ণচর উপজেলার পশ্চিম চরজব্বর এলাকায়। তিনি নিহতের ভাড়ায় চালানো ইজিবাইকের মালিক।
নিহতের জেঠাতো ভাই মোহাম্মদ করিম বলেন, তার চাচাতো ভাই আবুল কালাম কক্সবাজার শহর ও খুরুশকূল এলাকায় ভাড়ায় ইজিবাইক চালাতেন। প্রতিদিন সকালে বাড়ী থেকে বের হতেন এবং গাড়ী চালানো শেষে রাত ১০ টার মধ্যে ফিরতেন। মঙ্গলবার সকালে বাড়ী থেকে গাড়ী চালানোর জন্য বের হয়েছিলেন। কিন্তু রাত ১০ টার পরও বাড়ী না ফেরেননি। এতে উদ্বিগ্ন স্বজনরা সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি।
“ বুধবার সকালে খুরুশকূলের আল্লাঅলা হ্যাঁচারির পাশের একটি নালায় আবুল কালামের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা স্বজনদের অবহিত করে। পরে ঘটনাটি থানায় অবহিত করেন স্বজনরা। “
নিহতের এ স্বজন অভিযোগ করেন, “ কয়েকদিন আগে কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ায় জনৈক ছুরত আলমের মালিকাধীন গ্যারেজ থেকে একটি ইজিবাইক চুরির ঘটনা ঘটে। গাড়ীটির মালিক ছিলেন জনৈক জাফর উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। আর গাড়ীটির চুরির ঘটনায় আবুল কালাম জড়িত বলে অভিযোগ তোলা হয়। “
এ ঘটনায় খোঁজ নিতে দুইদিন আগে গ্যারেজ ও গাড়ীর মালিকসহ ৪/৫ জন আবুল কালামের বাড়ীতে গিয়েছিল এবং চলে আসার সময় দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগে জানান, মোহাম্মদ করিম।
তিনি দাবি করেন, ঘাতকরা আবুল কালামকে গাড়ীর গ্যারেজ পিটিয়ে হত্যার পর লাশটি খুরুশকূলের আল্লাঅলা হ্যাঁচারির পাশের একটি নালায় ফেলে রেখেছে। কয়েকদিন ভূক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে হুমকি এবং শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখে তা পরিস্কার।
ওসি ইলিয়াছ খান বলেন, সকালে খুরুশকূলের আল্লাঅলা হ্যাঁচারির পাশের একটি নালায় জনৈক ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে।
“ নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার হাত ও পায়ের কয়েকটি নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে আসার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। “
ওসি বলেন, “ সকালে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইজিবাইক মালিক জাফর উল্লাহকে পুলিশ আটক করেছে। তাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এছাড়া ঘটনায় জড়িত অন্যদের চিহ্নিত গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। “
গাড়ী চুরির অভিযোগে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণার কথা জানিয়ে ইলিয়াছ খান বলেন, কারা কি কারণে এ খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে রহস্য উদঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।
নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে বলে জানান তিনি।