কক্সবাজারে উখিয়া উপজেলার সাবেক রুমখাঁ এলাকায় পৈত্রিক সহায়-সম্পত্তি থেকে ভাই-বোনকে বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে প্রবাসী এক ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সাবেক রুমখাঁ জনাব আলী পাড়ার মৃত হাকিম আলীর ছেলে বশির উদ্দিন মাহমুদ (২৯) এবং মেয়ে ফাতেমা বেগম গণমাধ্যমের কাছে এ অভিযোগ করেন।
হাকিম আলীর ৫ ছেলে ও ২ মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভূক্তভোগীদের বাবা হাকিম আলী দীর্ঘ ৭০ বছরের বেশী সময় ধরে সৌদি আরবের মদিনায় বসবাস করেন। সেখানে তিনি অর্জিত সহায়-সম্পদ দিয়ে একটি ৮ তলার এবং আরেকটি ৫ তলা ভবন নির্মাণ করেন। তাদের বাবার সঙ্গে বড় ভাই নজির আহমদ ও কবির আহমদ প্রবাসে থাকতেন। হাকিম আলী ৮৯ বছর বয়সেই মদিনাতে মৃত্যুবরণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর বড় দুই ভাই পৈত্রিক সহায়-সম্পদগুলো দেখভাল করতেন।
এরই মধ্যে মদিনায় তাদের মালিকানাধীন ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে দুই ভাই বসবাস করলেও ৮ তলা বিশিষ্ট ভবনটি বিগত ২০১৯ সালে ৩৪ কোটি টাকা মূল্যে বিক্রি করে দেন।
অভিযোগ উঠেছে, পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ভবনটির বিক্রি বাবদ টাকা অন্যান্য ভাই-বোনদের ন্যায্য মতো পরিশোধ করলেও বশির উদ্দিন মাহমুদ এবং ফাতেমা বেগমকে বঞ্চিত করেন। ভবন বিক্রি বাবদ বশির ৭ কোটি টাকা এবং ফাতেমা বেগম ৩ কোটি টাকা করে পাওয়ার কথা। কিন্তু বড় ভাই নজির আহমদের কাছে থাকা ওই টাকাগুলো দুই ভাই-বোনকে পরিশোধ করেননি।
এদিকে প্রবাসে থাকা নজির আহমদ পৈত্রিক মালিকাধীন ভবন বিক্রির টাকাসহ নিজের অর্জিত অর্থ দেশে কয়েকটি জায়গা ক্রয় করেন। ওই জায়গায় ইতিমধ্যে বহুতল বিশিষ্ট পাকা স্থাপনাও নির্মিত হয়েছে। এসব জায়গা ক্রয় ও স্থাপনা নির্মাণে সংকটে পড়ায় বশির ও ফাতেমার কাছ থেকে নজির আহমদ ১ কোটি ১৬ লাখ টাকা নেন। ফাতেমা বেগমের ব্যাংক হিসাব থেকেই ওই টাকাগুলো নজিরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
নজির আহমদ টাকা নেওয়ার সময় ছোট দুই ভাই-বোনকে কথা দিয়েছিল কক্সবাজার শহরের শরণ আবাসিক এলাকার তুরকি রিসোর্ট এবং উখিয়ায় নজির আহমদ ভিলা নামের স্থাপনা দুইটির অর্ধেক অংশের মালিকানা দেওয়া হবে। কিন্তু ওই জায়গা ও স্থাপনার মালিকানা ভাই-বোনদের না দিয়ে নজির একাই ভোগ করছেন।
এ নিয়ে আপত্তি জানানো হলে নজির আহমদ তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মিদের দিয়ে হুমকি-ধমকিসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলেন। এখনো নানা ছল-চাতুরির মাধ্যমে নজির আহমদ ভাই-বোনদের বঞ্চিত করে হয়রানি অব্যাহত রেখেছেন।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দেশে কোটি কোটি টাকা হোন্ডির মাধ্যমে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে।
এ ব্যাপারে সৌদি প্রবাসী অভিযুক্ত নজির আহমদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, তার সহায়-সম্পদ ন্যায্য মতে ভাই-বোনদের পরিশোধ করেছেন। তিনি প্রবাসে থাকার সুবাদে কুমতলবের বশে ছোট ভাই-বোনেরা মিথ্যা অপপ্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। “
এদিকে হাকিম আলী প্রবাসে জীবিত থাকা অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে দেশে তার সহায়-সম্পদ দেখভাল করতেন ভাগিনা মীর আহমেদ।
এ নিয়ে তিনি অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নজির আহমদ তার ছোট ভাই-বোনদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করেছেন। ভাই-বোনদের কাছ থেকে নেওয়া টাকা জায়গা কিনে স্থাপনা নির্মাণ করলেও মালিকানা এখনো বুঝিয়ে দেননি।”