বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে কক্সবাজারে একাধিক ব্যাক্তি থেকে চাঁদা দাবীর অভিযোগ উঠেছে মনির খান ও তার সহযোগী মো. শরীফের বিরুদ্ধে। সদর উপজেলার পিএমখালীর রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবীর ভিডিও ভাইরালের পর মূখ খুলতে শুরু করেছে আরও অনেকে। তাদের প্রতারণা থেকে বাদ পড়েনি ফার্নিচার ব্যবসায়ী ও মুরগীর ফার্মের মালিকও।
শনিবার বিকেলে এমন অভিযোগ তুলেছেন কক্সবাজার উত্তর বন-বিভাগের আওতাধীন পিএমখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বাবর। তার দাবি, শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে হঠাৎ পিএমখালী ইউনিয়নের মোহাম্মদ হাছনের ছেলে মো. শরীফ আমার কার্যালয়ে এসে সমন্বয়ক মনির খানের কথা বলে বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে দাবী করে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন। না দিলে আমার অফিস গেরাও সহ আমার বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দেয়। পেপার পত্রিকায় আমার বিরুদ্ধে নিউজ করাসহ দুদক ও মন্ত্রনালয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে চাকরী থেকে বিদায় করে দিবে বলে হুমকি প্রদান করে।
একই কায়দায় ফার্নিচার ব্যবসায়ী দিদারুল আলম থেকে চাঁদা দাবী করেছে মনির খানের নেতৃত্বে থাকা চক্রটি। তার কাছে দাবী করা হয় দুই লাখ টাকা। এক সপ্তাহের মধ্যে টাকা না দিলে ক্ষতি হবে বলে হুমকি প্রদান করে।
আর মুরগীর ফার্মের মালিক ওবায়দুলের কাছে চাওয়া হয় তিন লাখ। একই কায়দায় তাকে হুমকি-ধামকি দেয়ার অভিযোগ তার।
এদিকে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘ চাঁদা দাবীর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর স্থানীয়দের সহায়তায় মনিরের সহযোগী মো. শরীফকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মো. শরীফ মনিরের নির্দেশে রেঞ্জ কর্মকর্তার কাছে যান এবং তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন বলে স্বীকার করেন। মনির নিজেও বিভিন্ন ব্যবসায়ী থেকে মুঠোফোনে চাঁদা দাবী করেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন আটক শরীফ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ছাত্র-জনতা ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত সবার মধ্যে ঐক্য থাকলেও পরবর্তীতে কয়েকটি অংশে বিভক্ত হয়ে পড়ে দেশে স্বৈরাচার হঠানোর নেতৃত্বদানকারীরা। মনির খানও নেতৃত্বে ছিলেন সম্মুখে।
মনির খান অংশের প্রতিনিধি শাহেদ ওয়াহেদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ সে নেতৃত্ব দিলেও তার বর্তমান কর্মকান্ড আমরা সমর্থন করি না। প্রশাসন যেভাবে আইনি পদক্ষেপ নিবে সেভাবে আমরা সহযোগীতা করবো।”
পুলিশ বলছে, ‘ সমন্বয়ক পরিচয়ে একটি চক্র নিরীহ লোকজনকে হয়রানি করছে। সম্প্রতি মনির খান অংশের নেতৃত্বে থাকা কথিত সমন্বয়করা বিমানে ঢাকা গিয়েছেন। অতি গোপনে তাদের ঢাকা যাওয়া, তাও আকাশপথে তা নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাদের প্রশ্ন এই অর্থ আসে কোথা থেকে..?
এবিষয়ে জানতে মনির খানের মুঠোফোনে একাধিক চেষ্টা করলেও ফোন ধরেননি। পরে তাকে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তার জবাব দেননি তিনি।