বুধবার , ২২শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শিল্প-অর্থনীতি

চলতি বছর শুঁটকির চাহিদা ৫৪ হাজার টন

চট্টগ্রামে শুঁটকি উৎপাদন শুরু হয়ে গেছে। দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও শুঁটকি রপ্তানি হচ্ছে। চট্টগ্রাম নগরের আছাদগঞ্জের পাইকারি বাজার শুঁটকি রপ্তানির বড় কেন্দ্র। এখানকার শুঁটকি বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এই শুঁটকি উৎপাদন কাজে হাজার হাজার শ্রমিক নিয়োজিত। খবর বাসসের।

চলতি বছর ৫৪ হাজার ৭৫০ টন শুঁটকির চাহিদা রয়েছে। যার মধ্যে ২২ হাজার টন দেশীয় উৎপাদন, বাকি ৩৩ হাজার টন আমদানি। চট্টগ্রাম থেকে রপ্তানি হওয়া শুঁটকির প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ আসে আছাদগঞ্জ ও চাক্তাই বাজার থেকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪৭ লাখ টন মাছ ধরা হয়, যার ৭ লাখ টন শুঁটকি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে শুঁটকি রপ্তানি থেকে বাংলাদেশ ২ দশমিক ৫৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

চট্টগ্রামের শুঁটকি উৎপাদন কেন্দ্রগুলো দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর, কর্ণফুলী নদীসহ বিভিন্ন এলাকার তীরে গড়ে উঠেছে। বাকলিয়া, ইছানগর, ডাঙ্গারচর, চাক্তাই, রাজাখালী, মাইজ্যারটেক, জুলধা প্রভৃতি অঞ্চলে ২ শতাধিক শুঁটকির আড়ত রয়েছে। যেখানে প্রতি দিন শত শত শ্রমিক কাজ করেন। শুঁটকি উৎপাদন কাজে নারীদের ভূমিকা অনেক বেশি। রাশেদা খাতুন, রাবেয়া খাতুনসহ অনেক নারী শ্রমিক সকালে সূর্য ওঠার পর থেকে কাজ শুরু করেন। তারা সারা দিন কাজ করে মজুরি হিসেবে ৩০০ টাকা পান।

শুঁটকি শুকানোতে সময় ও পরিশ্রম লাগে। ছোট মাছগুলো রোদে দ্রুত শুকানো যায়। তবে বড় মাছ যেমন ছুরি মাছ বা লইট্যা মাছ শুকাতে বেশি সময় এবং শ্রমের প্রয়োজন হয়। বর্তমানে শুঁটকি শুকানোর সময় ৩-৪ দিন লাগে। উৎপাদিত শুঁটকি আছাদগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো হয় এবং বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।

আছাদগঞ্জ বাজার দেশের শুঁটকির সবচেয়ে বড় বাজার। এখানে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার শুঁটকির হাট বসে। শুঁটকির বিকিকিনি অন্যান্য দিনেও চলে। প্রতি মৌসুমে ১৫ থেকে ২০ হাজার টন শুঁটকি উৎপাদন হয়, যার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে চট্টগ্রামের শুঁটকির চাহিদা বেশি।

গত বছর আগস্টে শুঁটকি উৎপাদন মৌসুম শুরু হলেও সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেপ্টেম্বর মাসে শুঁটকি উৎপাদন হয়নি। নভেম্বর মাস থেকে শুঁটকি উৎপাদন পুনরায় শুরু হয়। 


সম্পর্কিত খবর