শনিবার , ২৬শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রামু

মামলা প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্ব: অভিযোগ ওসি তৈয়বুরের বিরুদ্ধে

কক্সবাজারের রামুতে মামলা প্রক্রিয়ায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তৈয়বুর রহমানের বিরুদ্ধে। গেল ১৬ জুলাই কক্সবাজারের রামুতে ছাত্র প্রতিনিধি কর্তৃক দুইজনকে আটক করে রামু থানা পুলিশ। আটক হওয়া ব্যক্তিদের একজন ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের বড় ভাই উখিয়ার উপ – সহকারী কৃষি কমকর্তা আবদুর রহিম। অপরজন রামুর চৌমুহনী এলাকার ‘খেলাঘর’ নামে একটি দোকানের কর্মচারী মোহাম্মদ রিদোয়ান।

জানা গেছে, দোকান কর্মচারী রিদোয়ানকে একটি
রাজনৈতিক মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হলেও কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেনের বড় ভাই রহিমের বিরুদ্ধে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে
ছাত্রদের দমনসহ একাধিক অভিযোগ থাকলেও, তাকে ১৫১ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে রামু থানার ওসি মোহাম্মদ তৈয়বুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।

এ ঘটনায় স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে,পুলিশের এ ধরনের পক্ষপাত মূলক আচরণ ও দ্বিচারিতা দেশের প্রচলিত আইনের শাসন ওনন্যায়বিচারের মারাত্মক লঙ্ঘন। পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানান।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র প্রতিনিধি জসীম উদ্দীন বলেন,স্বৈরাচারের দোসর আবদুর রহিম রামু বাইপাস এলাকায় জুলাই আন্দোলনরত ছাত্রদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিলো। তিনি ছাত্রদের কাছ থেকে মোবাইল কেঁড়ে নিয়ে নানা ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা করেছিলেন। আমরা মনে করছি রামু থানার ওসি অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে আবদুর রহিমকে রাজনৈতিক মামলায় চালান না দিয়ে ১৫১ ধারায় কোর্টে চালান দিয়েছে।

এদিকে রিদোয়ানের বাবা দিনমজুর মনসুর আলমের অভিযোগ, রিদোয়ান দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছে। রাজনীতিতে জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। পুলিশ রিদোয়ানকে বিনা ওয়ারেন্টে আটক করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা একটি রাজনৈতিক মামলায় চালান করে। যার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মূলত ব্যক্তিগত শত্রুতা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে পুলিশকে দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

অ্যাডভোকেট শিপ্ত বড়ুয়া বলেন, যাকে তাকে ধরে রাজনৈতিক মামলায় চালান দেওয়া পুলিশের ব্যাড প্র্যাকটিস। একই দিনে দুজনকে একই ধরনের অভিযোগে আটক করে একজনকে নিয়মিত মামলায় আরেকজনকে নামমাত্র ১৫১ ধারায় চালান দেওয়ার ঘটনায় স্পষ্ট বুঝা যায়, রামু থানা পুলিশ অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে এই কাজ করেছে। এই বিষয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে তদন্ত করা দরকার বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তৈয়বুর রহমান বলেন,আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পাওয়ায় তাকে ১৫১ ধারায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। যদি রহিমের বিরুদ্ধে জুলাই জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদের বাঁধা প্রদানে জড়িত থাকলে রহিমকে আবারও গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) ও মুখপাত্র মোঃ জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, আটক দুইজনের মধ্যে একজন নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় সরকারি বিধি অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নাই। দ্বিতীয়ত তিনি একজন সরকারি চাকরিজিবী। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না পাওয়ায় আমরা তাকে ১৫১ ধারায় চালান দিই।


সম্পর্কিত খবর