বৃহস্পতিবার , ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

কক্সবাজার

হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ি

‘ইয়াবা লুট করতেই আসামী ছেড়ে দেয় পুলিশ’

টেকনাফের হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির চার সদস্যের বিরুদ্ধে ইয়াবা লুটের অভিযোগ উঠেছে৷ উদ্ধারকৃত ৪ হাজার ইয়াবা লুট করতেই ছেড়ে দেয়া হয় আসামী আব্দুল মাজেদকে।

গেল ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনছিপ্রাংয়ের মাজেদের বাসা তল্লাশী করে এসব ইয়াবাসহ তাকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু এ অভিযানের তথ্য গোপন করে আসামীকে ছেড়ে দেয়। এছাড়া জব্দ করা চার হাজার ইয়াবারও কোন মামলা করেনি পুলিশ।

অভিযুক্তরা হলেন- হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) শাহাদাত সিরাজী, উপ-পরিদর্শক শামীম উদ্দিন, চৌকিদা শেখ কবির ওরফে পুতিয়াসহ আরও দুই পুলিশ সদস্য।

আসামী মাজেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন- ১৮ তারিখ রাত ১ টার দিকে এসআই শাহাদাত ও শামীমের নেতৃত্বে ৪ পুলিশ ও চৌকিদার শেখ কবির আমার বাসায় এসে তল্লাশী শুরু করেন। এসময় বাসায় একজনের জিম্মা রাখা চার হাজার ইয়াবা তারা পান। তারপর ইয়াবাসহ আমাকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে ফাঁড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু পথিমধ্যে উনছিপ্রাংয়ের লাল ব্রিজ এলাকায় নিয়ে আমাকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। পরে চৌকিদারের সাথে তারা আলাদা বৈঠক করেন। এরপর আমাকে চৌকিদারকে বুঝিয়ে দিয়ে ইয়াবাগুলো নিয়ে তারা চলে যায়৷ পরে চৌকিদার কবির আমাকে উনছিপ্রাং বাজারে নাইটগার্ডের সামনে নামিয়ে দিয়ে দ্রুত সটকে পড়েন।

অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে চৌকিদার শেখ কবির বলেন- শামীম ও শাহাদাতের নেতৃত্বে অভিযান হয়েছে। তারা বিস্তারিত বলতে পারবে। ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে কিনা তা তারায় জানাতে পারবে।

আটকের পর মাজেদকে কেন ছেড়ে দেয়া হয় এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ কবির বলেন- আটক করে তাকে নিয়ে আসা হয়। লাল ব্রিজে এসে তার সঙ্গে কথা বলার পর আমাকে এসআই শামীম তাকে বাজারে নামিয়ে দিতে বলেন। তাই নামিয়ে দিয়েছি।

আপনি তো ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ ৩ নাম্বার ওয়ার্ডে কেন আসছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কিছুই বলতে পারেননি। পরে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। গ্রাম পুলিশ শেখ কবিরের বিরুদ্ধে পুলিশ নিয়ে গিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যাপরে জানতে চাইলে হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক শাহাদাত সিরাজী বলেন- যা হয়েছে শামীম ‘স্যারের নেতৃত্বে। আপনাদের কিছু জানার থাকলে তার সঙ্গে কথা বলেন। আমি এখন হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি উপ-পরিদর্শক শামীম উদ্দিন।

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ ফাঁড়ির এক সদস্য অভিযানের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার দাবি- ইয়াবা লুট করতেই ছেড়ে দেয়া হয় আসামী আব্দুল মাজেদকে। তারপর ইয়াবাগুলো আড়াই লাখ টাকায় পুলিশের ঘনিষ্ট এক মাদক কারবারির কাছে বিক্রি করা হয়। তারমধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নেন এসআই শামীম, শাহাদাত পান ৬০ হাজার, অন্য দুই সদস্যকে দেয়া হয় ২০ হাজার টাকা করে। বাকি ৩০ হাজার পান গ্রাম পুলিশ সদস্য সোর্স শেখ কবির ওরফে পুতিয়া।


সম্পর্কিত খবর

Flight Centre

Demo Description

This will close in 20 seconds