কক্সবাজার টেকনাফে টাকার বিনিময়ে আসামিকে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সানজিব নাথ টেকনাফ মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর।
সানজিব নাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মাদক আসক্ত অবস্থায় আটকের পর ছেড়ে দেয়ার কথা বলে আসামির স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। পরে কানের দুল বিক্রি করে ৯৫ হাজার টাকা দিলেও আসামিকে না ছেড়ে থানায় পুলিশের আইনে থার্টি ফোর দিয়ে আদালতে পাঠান ওই এসআই।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮ টায় টেকনাফ সদরের ববরই তলী এলাকা থেকে ওসমানকে আটক করা হয়। তিনি জাদিমুড়া নেচারি পার্ক এলাকার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন।
ওসমানের স্ত্রী সেতেরা দাবি করেন, আমার স্বামী সেদিন রাত নয়টা ফোন করে বলে ,আমাকে পুলিশ আটক করেছে তুমি এক লাখ টাকা নিয়ে থানায় আস। আমি বললাম স্বামীকে আমার কাছে কোন টাকা নাই। আমার স্বামী বলে ,কানের দুল বিক্রি করে টাকা জোগাড় কর আমাকে এখন ছেড়ে দিবে। পরে কানের দুল বন্ধক রেখে ৯৫ হাজার টাকা টাকা নিয়ে এসআই জানজিব নাথের হাতে তুলে দেন আমার স্বামী। টাকা বুঝে পেয়ে পুলিশ বলেন, ‘ কক্সবাজার আদালত থেকে তোমার স্বামীকে ছেড়ে দেব। প্রয়োজনে তোমার বাড়িতে দিয়ে আসব।তুমি বাসায় চলে যাও।’
সেতেরা আরও বলেন, ‘কিন্তু আমার স্বামীকে না ছেড়ে আদালতে নিয়ে যান পুলিশ। আমার স্বামী থেকে এক টাকা ও কম নেয়নি। আমি টাকা তিন ভাগ করে থানায় এসেছি। প্রথমে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিলে বলে , দিলে এক লাখ টাকা দিতে হবে এখনি ছেড়ে দিব। আমি আবার বিশ হাজার দিলাম। পুলিশ আমার প্রতি রেগে গিয়ে বলল সোজা হিসাব বুঝা না। আমি কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে বাকি ২৫ হাজার টাকা দিলাম।
তখন পুলিশ জানান , আমার স্বামীকে ছাড়া যাবে না। তাকে শুধু হাল্কা মামলা নিয়ে আদালতে পাঠাব । এ কথা শুনে টাকা ফেরত চাইলে আমাকে সোজা বাড়ি চলে যেতে বলে।এ খবর যখন সাংবাদিকদের কাছে পৌঁছে যায় তখন পুলিশ নড়েচড়ে বসে। বুধবার সন্ধ্যায় স্বামী আদালত থেকে জরিমানা দিয়ে বাড়িতে আসলে। পুলিশ মোবাইল করে সাংবাদিকদের টাকা লেনদেনের কথা না বলতে নিষেধ করেন। পরে অর্ধেক টাকা ফেরতের আশ্বাস দেন।
টাকা ফেরতের ফেরত দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে
মোঃ ওসমান বলেন, বিষয়টি আমরা সমাধান করছি।আপনারা নিউজ করিও না , নিউজ করলে আমার জন্য সমস্যা হবে বলে জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই সানজিব কুমার নাথের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি সেকেন্ড অফিসার আরেফিন স্যার অবগত আছেন। আপনি স্যারের কাছে আসেন’।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার” সেকেন্ড অফিসার”
সাব ইন্সপেক্টর আরেফিন বলেন, ‘বিষয়টি আমি খবর নিয়ে দেখতেছি, আপনি থানায় এসে দেখা করেন।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখতেছি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন জানান, ‘ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’