কক্সবাজার টেকনাফে মোজা আলম নামে এক যুবককে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে। আজ সকাল দশটায় টেকনাফ প্রেস ক্লাবের সামনে চোরাকারবারীদের বিরুদ্ধে পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। গত বুধবার রাত ২ টায় অস্ত্রসহ আটক দেখালে করলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র নিন্দা ঝড় উঠেছে।আটককৃত মোজা আলম (২৭) টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপের মিস্ত্রী পাড়া কালোর ছেলে।
তবে কোস্টগার্ডের দাবি, বুধবার মধ্যরাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পূর্ব পাড়ায় জনৈক ব্যক্তি সশস্ত্র অবস্থায় অপরাধ সংঘটনের জন্য অবস্থান করছে- এমন খবরে কোস্টগার্ডের একটি দল অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কোস্টগার্ড সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্দেহজনক এক ব্যক্তি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা চালায়। এ সময় ধাওয়া দিয়ে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।পরে আটক ব্যক্তির দেহ তল্লাশি করে একটি নাইন এমএম বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলি পাওয়া যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ইসমাইল জানিয়েছেন, মোজা আলম একজন নিরপরাধ যুবক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিজিবির সঙ্গে কাজ করে।তাই চোরাকারবারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে কোস্টগার্ড কে ভূল তথ্য দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে।কে ? বা কারা ফাঁসিয়েছেন এলকাবাসী ভালো জানেন। আমার দাবি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করার দাবি জানাই।
মোজা আলমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে মুক্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর আয়োজনে মানবন্ধনে এলাকাবাসী দাবি করেন, মূলত ঘটনাটি হচ্ছে এলাকার চোরাকারবারী সওকত ও মনছুরের ট্রলার আটক করে বিজিবি। তাদের চোরাচালান বাঁধা হয়ে দাড়াঁয় মোজা আলম। এ কারনে মাদক কারবারিরা ষড়যন্ত্র করে মিয়ানমার থেকে আসা অস্ত্র দিয়ে
কোস্টগার্ডকে ভূল তথ্য দিয়ে অস্ত্র দিয়ে মিথ্যা মামলা ফাঁসিয়েছেন। মোজা আলম কোনক্রমে অবৈধ মাদক ও মানবপাচারের সাথে জড়িত ছিল না, যা তদন্ত করলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
এলকার কলেজ ছাত্র মোঃ ইব্রাহীম বলেন,মোজা আলমকে সরিয়ে দিতে পারলে মাদক, মানবপাচার, মিয়ানমারে পণ্য পাচার সুবিধাজনক হবে এ চিন্তা করে তাকে অস্ত্র দিয়ে কোস্টগার্ড কর্তৃক গ্রেপ্তার করাই। তাই অস্ত্রসহ আটক দেখানো ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা বর্তমান সরকারের কাছে তদন্তপূর্বক মামলা প্রত্যাহার ও তার মুক্তি দাবী করছি।’
স্থানীয় ব্যক্তি রফিক আলম বলেন, মোজা আলমের বেদেশী অস্ত্র থাকবে এটা হাস্যকর ব্যাপার। বিজিবির সঙ্গে কাজ করেই তাই তার কাল হলো।আমরা জীবনে কখনো শুনিনি তার অবৈধ অস্ত্র ছিল সেটা।এ বিষয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আসলে প্রসাশন চোরাকারবারীদের সঙ্গে আঁতাত করে চলে।তার কারণে মাস্টারমাইন্ড চোরাকারবারী ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।যে ছেলেটা চাকু দেখলে পর্যন্ত ভয় পায়। তার কিভাবে অস্ত্র থাকবে।এ ঘটনাটি নাটক এবং ষড়যন্ত্র।
শহিদের স্ত্রী খুরশিদা আক্তার দুই সন্তানকে পাশে রেখে কান্না কন্ঠে বলেন, ‘আমার তিন সন্তান, কোনদিন দেখেনি স্বামী কোন অবৈধ কার্যক্রমে জড়িত ছিল। মূলত বিজিবির সঙ্গে কাজা করার পর আমার স্বামীর বিরোদ্ধে ষড়যন্ত্র নেমেছে এবং মাদক অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল চোরকারবারিরা।
গত কয়েকদিন আগেও আমার স্বামীকে অস্ত্র দিয়ে আটক করিয়ে দিবে বলে হুমকি দিয়েছিল মাদক কারবারি ইয়াছিন মিস্ত্রীর ছেলে সওকত ও মনছুর গং। তারা কার থেকে অস্ত্র ক্রয় করছে সব তথ্য আমার কাছে আছে।যারা বিক্রি করছেন তারা, রফিক ও নুর কামাল ।
১৫০০ হাজার টাকার দামে অস্ত্র কিনে আমার স্বামীকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়েছে তদন্তের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং আমি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সুষ্ট বিচার দাবি করছি সরকারের কাছে।’
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘ কোস্টগার্ড কিভাবে অস্ত্র উদ্ধার করছে সে বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। আমাদের কাজ এখন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যেটা সত্য পাব সেটা নিয়ে আদালতে রিপোর্ট দাখিল করা।
কোস্টগার্ড সদরদফতরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান,তার বাড়িতে এবং তার শরীরে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এখন এসে পরিবারের পক্ষ থেকে যে বিষয়টি দাবি করেছে সেটি তাদের ব্যক্তিগত মতামত। এখানে আমাদের কোন মন্তব্য নেই।